ধানের ক্ষতিকর প্রধান বালাইসমূহঃ

আগাছাঃ ঘাস, সেজ ও চওড়া পাতা জাতীয়
পোকাঃ মাজরা পোকা, বাদামী গাছ ফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা
রোগঃ খোল পোড়া, পাতা ঝলসানো (Blast)
পুষ্টির ঘাটতি জনিত সমস্যা

ধানের প্রধান আগাছা সমূহঃ

ক্ষুদে শ্যামা, শ্যামা, ছোট চেচড়া, বড় চেচড়া, চেচড়া, হলদে মুথা, বড় চুচা, জৈনা, নুনিয়া, এরাইল, পানি ডগা, শুষনি শাক, ঝিল মরিচ, পানি লং।

ধানের আগাছা
ধানের আগাছা

কেন আগাছা দমন জরুরী?

  • খাদ্য উপাদান,পানি ও সূর্যালোকের জন্য ফসলের সাথে প্রতিযোগীতা করে
  • পোকা মাকড় ও রোগবালাই এর আবাসস্থল
  • নিম্নমানের ফসল ফলে
  • বাজারমূল্য কমে যায়
  • ফসলের ফলন ৫০%পর্যন্ত ব্যাহত করে

ধানের আগাছা দমনে আধুনিক সমাধান: ক্রস আউট

Crossout

ক্রস আউট যেভাবে কাজ করে?

  • ক্রস আউট আগাছার শিকড় ও পাতা দিয়ে খুব দ্রুত শোষিত হয়।
  • এসিটোহাইড্রক্সি এসিড সিনথেজ নামক এনজাইম গাছের প্রোটিন/এমাইনোএসিড তৈরিতে সহায়তা করে।
  • ক্রস আউট প্রয়োগের ফলে উক্ত এনজাইম ব্লক হয়ে যায়। ফলে প্রোটিন তৈরি হতে পারেনা এবং আগাছার জীবনচক্র বাধাগ্রস্থ হয়।
  • পাতা (Foliage) ও মুল (Root) দ্বারা শোষণের পর ধীরে ধীরে আগাছা ঢলে পড়ে, পাতা ও কান্ড বিবর্ণ হয়ে হলুদ রঙ ধারণ করে।
  • ৭-১০ দিনের মধ্যে পাতা, কান্ড শিকড়সহ আগাছা সম্পূর্ণরুপে পঁচে গিয়ে মরে যায়।

ক্রস আউট প্রয়োগের সময় ও পদ্ধতিঃ

সময়ঃ চারা রোপনের ৫-১০ দিনের মধ্যে।

সারের সাথেঃ সঠিক মাত্রার ক্রস আউট অল্প পরিমাণ পানিতে লেই করে নিতে হবে। উক্ত লেই ২-৩ কেজি সারের সাথে মিশিয়ে সমানভাবে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। ছিটানোর সময় জমিতে ২-৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে।

স্প্রে করেঃ স্প্রে করার ক্ষেত্রে জমিকে ছিপছিপে পানি থাকলেই হবে। পরবর্তীতে ২৪-৭২ ঘন্টার মধ্যে সেচ দিতে হবে। সমস্ত জমিতে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।

ক্রস আউট প্রয়োগে কৃষকের লাভ!!!!!!!!

  • আগাছা দমনে শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না।
  • আগাছা দমন জনিত খরচ ৫০% পর্যন্ত কমে।
  • ধানের বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে না ।
  • জমির পানি পরিস্কার থাকে।
  • জমি থাকে সম্পূর্ণ আগাছা মুক্ত।

মাজরা পোকা দমন ব্যবস্থাপনা

মাজরা পোকা: ৩ প্রকারের মাজরা পোকা বাংলাদেশের ধান ফসলের ক্ষতি করে।

  • হলুদ মাজরা পোকা- Yellow Stem Borer (Scirpophaga incertulus)
  • কালো মাথা মাজরা পোকা- Dark Headed Stem Borer (Chilo polychrysus)
  • গোলাপী মাজরা পোকা- Pink Borer (Sesamia inferens)

মাজরা পোকার ক্ষতির ধরণ

মাজরা পোকার কীড়া গুলো কান্ডের ভিতরে থেকে খাওয়া শুরু করে এবং গাছের ডিগ পাতার গোড়া কেটে ফেলে। ফলে ডিগ পাতা মারা যায়। একে ‘মরা ডিগ’ বা ‘ডেড হার্ট’ বলে। শীষ আসার পর মাজরা পোকা ক্ষতি করলে সম্পূর্ণ শীষ শুকিয়ে যায়। ‘সাদা শীষ’,‘মরা শীষ’ বা ‘হোয়াইটহেড’ বলে।

কালো মাথা মাজরা দমন

কালো মাথা মাজরা দমনে বাজারের সেরা সমাধান!!! ব্যাবিলনের প্রলয় ৩২ এসসি

প্রলয়
  • প্রবাহমান, স্পর্শক ও পাকস্থলী ক্রিয়া সম্পন্ন কীটনাশক
  • ভেতর ও বাহির উভয় দিক থেকে কাজ করে
  • প্রলয় পোকাকে দ্রুত মেরে ফেলে
  • কালো মাথার মাজরা ও হলুদ মাজরা পোকা সফলভাবে দমন হয়
  • বারবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়না
  • ফলে সময় ও খরচ উভয়টিই বাঁচে

রোপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে জমিতে প্রলয় প্রয়োগ করুন। বোতলটি ভালভাবে ঝাকিয়ে নিন ও অল্প পানিতে লেই তৈরি করুন। মাত্রা: ২০০ মিলি/একর। সক্রিয় উপাদান: (ইমিডাক্লোরপ্রিড ২০%+ফিপ্রনিল ৭%+ ডেল্টামেথ্রিন ৫%)।

বাদামী গাছ ফড়িং এর ক্ষতি

বাদামী গাছ ফড়িং এর ক্ষতি
বাদামী গাছ ফড়িং এর ক্ষতি

বাদামী গাছ ফড়িং দমন প্রযুক্তি

পেদা টিং টিং
  • পেদা টিং টিং -স্পর্শক, প্রবাহমান, স্নায়ু ক্রিয়া এবং ট্রান্সলেমিনার গুণসম্পন্ন আধুনিক কীটনাশক
  • পেদা টিং টিং – ভিতর ও বাহির উভয় দিক থেকে কাজ করে
  • পেদা টিং টিং – নিওনিকোটিনয়েড ও পাইরিডাইন অ্যাজোমেথিন জাতীয়
  • পেদা টিং টিং – প্রতি কেজিতে ৬০০ গ্রাম পাইমেট্রোজিন ও ২০০ গ্রাম নাইটেমপাইরাম সক্রিয় উপাদান বিদ্যমান।

পোকার স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল করে। পোকা দ্রুত খাদ্যগ্রহন বন্ধ করে দেয়। প্যারালাইসিস হয়ে মারা যায়।

পেদা টিং টিং- ব্যবহারে কৃষকের লাভ…???

  • বাদামী গাছ ফড়িং কার্যকরভাবে দমন হয়
  • বারবার কীটনাশক স্প্রে করতে হয় না
  • ফলে খরচ কমে
  • ফসল থাকে পোকামুক্ত
  • ফলন বৃদ্ধি পায়

খোলপোড়া রোগের লক্ষণ

খোলপোড়া রোগের লক্ষণ

ঝলসানো (Blast) রোগঃ

ঝলসানো (Blast) রোগ

মাটির উপরে ধান গাছের প্রতিটি অংশই যেমন- পাতা, গিট, কলার, নেক ও শীষ এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। ঝলসানো ( Blast) রোগের অনুকূল পরিবেশ-

  • হাল্কা মাটি যার পানিধারণ ক্ষমতা কম
  • ঠান্ডা আবহাওয়া
  • পাতায় শিশির জমে থাকলে
  • অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার ব্যবহার
  • রোগাক্রান্ত বীজ ব্যবহার
  • রোগ প্রবণ জাতের ব্যবহার
  • জমিতে বা জমির আশেপাশে অন্যান্য পোশক গাছ বা আগাছা থাকলে
  • তাপমাত্রা ২৫-২৮ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড
  • আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৯০% এর বেশি

ঝলসানো (Blast)রোগের সমাধানঃ

ট্রিপল সুপার পাওয়ারফুল ছত্রাকনাশক ট্রয়। ট্রয়-এর ইউ এস পি-

ট্রয়
  • তিনটি সক্রিয় উপাদানের সংমিশ্রণে ট্রয় বাজারের সেরা ছত্রাকনাশক
  • প্রতিষেধক, প্রতিরোধক ও উচ্ছেদক গুণসম্পন্ন প্রবাহমান ছত্রাকনাশক
  • ব্লাস্ট, খোলপোড়া, লক্ষীর গু, কালো শীষ এবং অন্যান্য ছত্রাকজনিত রোগের একমাত্র সমাধান
  • প্রয়োগের পর দ্রুত শোষিত হয়
  • বৃষ্টির পানিতে সহজে ধুয়ে যায় না
  • গাছ সবুজ ও সতেজ করে
  • মা পাতা ধান পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত সবুজ থাকে
  • চিটামুক্ত চকচকে ও পুষ্ট দানা
  • অধিক ফলন

স্প্রে করার ১ ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ণ গাছে ছড়িয়ে পড়ে

ট্রয়

ধানে ট্রয় ব্যবহারের সময়

ধানে ট্রয় ব্যবহারের সময়