হাইব্রিড শসা চাষ পদ্ধতি

জলবায়ু ও মাটিঃ

তবে বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলের তাপমাত্রা শীতকালে কখনও কখনও ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে চলে যায় যা শসা চাষের জন্য মারাত্বক হুমকি স্বরুপ। শসার ভালো ফলনের জন্য সবচেয়ে অনুকূল তাপমাত্রা হলো দিনের বেলায় ২৫-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং রাতের বেলায় ১৮-২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মেঘলা আবহাওয়ায় শসার ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি শসা চাষের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। 

বীজ বপনের সময়ঃ

সারা বছরই শসা চাষ করা যায়। তবে তীব্র শীতের যেহেতু গাছের বৃদ্ধি তুলনামূলক কম হয় সেকারণে ঐসময় ফলন একটু কম হয়।

বীজের হারঃ

একর প্রতি বীজ বপণের হার ২০০-৩০০ গ্রাম।   

জমি নির্বাচন ও তৈরিঃ

সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। জমিতে প্রথমে ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন জমিতে কোন ঢিলা বা আগাছা না থাকে। শসা গাছের শিকড়ের যথাযথ বৃদ্ধির জন্য উত্তমরুপে মাদা তৈরি করতে হবে। 

বীজ বপনের পদ্ধতি ও দূরত্বঃ

বীজ বপনের পূর্বে ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে নিলে অঙ্কুরোদগম ভাল হয়। ভালো ফলরের জন্য বীজ মাদা তৈরী করে রোপন করতে হয়। 

মাদার আকারঃ

ব্যাস ৫০-৫৫ সেমি ,গভীরতা ৫০-৫৫সেমি এবং তলদেশের ব্যাস ৪০-৪৫। এক্ষেত্রে সারি থেকে সারি ২ মিটার এবং প্রতি সারিতে ২ মিটার পর পর মাদা তৈরী করে সেই মাদায় বীজ বপন করা হয়। ২-৩ সেমি গভীরে প্রতি মাদায় ২ টি করে বীজ বপন করতে হবে এবং চারা গজানোর ৭ দিন পর সুস্থ চারাটি রেখে বাকিটা তুুলে ফেলতে হবে। বীজ বপনের পর প্রয়োজনীয় সেচ্ আবশ্যক।

বাউনি দেওয়াঃ

শসার কাঙ্খিত ফলন পেতে অবশ্যই মাচায় চাষ করতে হবে। শসা মাটিতে চাষ করলে ফলের একদিক বিবর্ণ হয়ে বাজার মূল্য কমে যায়, ফলে পচন ধরে এবং প্রাকৃতিক পরাগায়ন কম হয় এজন্য ফলন কমে যায়। 

সারের পরিমাণ ও প্রয়োগের নিয়ম  (একর প্রতি)ঃ

শসার সারের পরিমাণ ও প্রয়োগের নিয়ম

অন্যান্য পরিচর্যাঃ 

সময়মত নিড়ানী দিয়ে আগাছা পরিস্কার করে সাথে সাথে মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। খরা হলে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ্ দিতে হবে। 

শসার রোগ ও পোকা এবং এর সমাধানঃ  

সাদা মাছি 

এরা পাতার রস চুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে। এরা ভাইরাস জনিতরোগ ছড়ায়। 

প্রয়োগ মাত্রাঃ  ১০ লিটার পানিতে ২ গ্রাম টোপাম্যাক

শসার পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকাঃ 

ক্ষুদ্র কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়। 

শসার সুড়ঙ্গকারী ও ফল ছিদ্রকারী পোকা
শসার সুড়ঙ্গকারী ও ফল ছিদ্রকারী পোকা

শসার সুড়ঙ্গকারী ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনে ব্যবহার করুন লরেন্ট। প্রয়োগ মাত্রাঃ ১০ গ্রাম/১০লি

লরেণ্ট

শসার পাউডারি মিলডিউঃ

শসার পাউডারি মিলডিউ

লক্ষণঃ পাতার উপরের দিকে সাদা রঙের পাউডারের মতো দাগের সৃষ্টি হয় এবং পরে দাগ গুলো বড় হয়ে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পরে। এ রোগের কারণে ফলের গুনগত মান কমে যায় এবং ফলন কমে যায়।

পাউডারি মিলডিউ রোগের প্রতিকারঃ ১। প্রোকার্ব ৭২০ এস এল ১০ লিটার পানিতে ১০ মি.লি., ২। সেস্জিম ৫০ ডব্লিউপি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম।

পাউডারি মিলডিউ রোগের প্রতিকার

অধিক ফলন পেতে স্প্রে করুন “ফসলি গোল্ড”। ২০ মিলি ফসলি গোল্ড ১০ লি: পানিতে মিশিয়ে প্রতি ২০-২৫ দিন পর পর স্প্রে করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

ফসলি গোল্ড